বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক কৃষকই বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা গাছের চাষাবাদ করছেন। তবে ভালো ফলন পেতে হলে সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। তাই চাষিদের জানা দরকার – মাল্টা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত।
মাল্টা গাছে সার প্রয়োগের গুরুত্ব
-
গাছের সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
-
ফুল ও ফলের সংখ্যা বাড়ায়।
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
-
মাটির উর্বরতা বজায় রাখে।
মাল্টা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
১. জৈব সার
-
প্রতি বছর গাছের গোড়ায় ১৫–২০ কেজি গোবর সার বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করতে হবে।
-
জৈব সার গাছের মূল শক্ত করে এবং মাটির উর্বরতা দীর্ঘদিন ধরে রাখে।
২. রাসায়নিক সার
-
ইউরিয়া: গাছের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
-
টিএসপি (TSP): ফুল ও ফল ধরার সময় কাজে লাগে।
-
এমওপি (MOP): ফলের আকার ও স্বাদ উন্নত করে।
সার প্রয়োগের পরিমাণ (প্রতি গাছ অনুযায়ী)
-
১–২ বছর বয়সী গাছ: ইউরিয়া ২০০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম, এমওপি ১০০ গ্রাম।
-
৩–৫ বছর বয়সী গাছ: ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ৩০০ গ্রাম, এমওপি ২০০ গ্রাম।
-
৫ বছরের বেশি বয়সী গাছ: ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৩০০ গ্রাম।
৩. মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সার
-
দস্তা (Zinc), বোরন (Boron) এবং ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium) স্প্রে করলে ফল ঝরা কমে যায় এবং ফলের মান ভালো হয়।
সার প্রয়োগের সঠিক সময়
-
গ্রীষ্ম মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি–এপ্রিল): নতুন কুঁড়ি ও ফুল আসার আগে।
-
বর্ষাকালে (জুন–জুলাই): গাছের বৃদ্ধি বাড়াতে।
-
শীত মৌসুমে (অক্টোবর–নভেম্বর): ফল পরিপক্ক হওয়ার সময়।
সার প্রয়োগের কিছু সতর্কতা
-
সার দেওয়ার পরপরই সেচ দিতে হবে।
-
অতিরিক্ত সার ব্যবহার করলে গাছের ক্ষতি হতে পারে।
-
রোগাক্রান্ত গাছে সার প্রয়োগ না করে আগে চিকিৎসা করতে হবে।
উপসংহার
সঠিক মাল্টা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি অনুসরণ করলে গাছ সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে এবং প্রচুর ফল দেয়। তাই প্রতিটি কৃষকের উচিত সঠিক সময়ে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে গাছের যত্ন নেওয়া।


0 Comments